শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পদক পাচ্ছেন ধর্ষন মামলার আসামী ও পরিবেশবিধ্বংসী হৃদয় দেবনাথ।এমন সংবাদে শ্রীমঙ্গলে এখন তোলপাড় চলছে। এ নিয়ে মৌলভীবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র রক্ষা আন্দোলন এক সংবাদ বিবৃতি দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছে। তারা তাকে পুরস্কার দেয়ার আগে তার কর্মকান্ড পূন যাচাই এর আবেদন করেন। শুধু এ নয় এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ওই বিবৃতিতে তারা জানায়, হৃদয় দেবনাথের বিরুদ্ধে মাদক সেবন, চাদাঁবাজী, বালুর মহাল থেকে মাসোহারাসহ, তদবির বাণিজ্যের নানা অভিযোগে রয়েছে।হৃদয় দেবনাথের ‘চাঁদাবাজি কান্ডের’ অডিও রেকর্ড ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বনের ভিতরে উচ্চ শব্দ করা, রান্নাকরা ও প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ নিক্ষেপ নিষিদ্ধ হলেও সে নিজে এ জাতীয় কাজে লিপ্ত। তার ফেইসবুকে লাইভে দেখা যায় বনের ভিতরে সে উচ্চ মিউজিকের সাথে নাচ্ছে।
সংগঠনের আহবায়ক প্রভাষক জলি পাল জানান, হৃদয়ের ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, বিভিন্ন সময় অন্যের লাগানো গাছের নীচে হাত রেখে নিজে বৃক্ষ রোপন করছে বলে ছবি পোষ্ট দিয়েছে। পুরস্কারের ডকুমেন্ট জমা দেয়ার জন্য ২/৩ টা লোক দেখানো কাজ হয়তো করেছে। যা রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের জন্য যতেষ্ট নয়। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা, চাঁদাবাজী মামলাসহ শ্রীমঙ্গল থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরী রয়েছে।
এই সংগঠনের সদস্য সচিব এডভোকেট হাসান অনির্বাণ বলেন, ‘হৃদয়ের বিরুদ্ধে সরকারী বে-সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তাই প্রধানন্ত্রীর পদক নয়, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি’।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মনসুরুল হক বলেন,আমরাতো শ্রীমঙ্গলেই থাকি হৃদয় পরিবেশ নিয়ে কোন কাজ করলেতো তা চোখে পড়তো।
শ্রীমঙ্গল বণ্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগ থেকেসদ্যবদলী হওয়ারেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম খাঁন জানান,‘সামাজিক সংগঠনগুলো বিশেষ দিবসগুলোতে বনে বৃক্ষরোপন করেন। হৃদয় সাথে থেকে ছবি তুলে থাকতে পারেন,মোটা দাগে বনায়নে তার ভূমিকার কোন রেকর্ড বন বিভাগে নেই’। এ সময় তিনি আরো জানান, মৌলভীবাজারের প্রাক্তন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছ থেকে আরেকজনের উদ্ধার করা বাঘের বাচ্চাকে খাওয়ানো কথা বলে প্রতারণা করে সে টাকা নিয়ে যায়।
এ ব্যপারে বণ্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ মৌলভীবাজারের বর্তমান বিভাগীয় কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বিষ্ময় প্রকাশ করেবলেন, ‘ব্যক্তিউদ্যোগে লাউয়াছড়া বনে১০ হাজার গাছ লাগানোতো দূরের কথা ১০টা গাছও লাগানো যাবেনা। এটি প্রাকৃতিক বন এখানে বাহিরের কারো এতো গাছ লাগানোর সুযোগই নেই।
তিনি বলেন, ‘হৃদয় দেবনাথ “জীববৈচিত্র ফাউন্ডেশন” নামে একটি সংগঠনের নাম লাগিয়ে করোনায় দু:স্থদের সাহায্যের কথা বলে বার বার চাঁদা চায় । এ নিয়ে তারা বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন।
শ্রীমঙ্গলে কিছু লোক জমি খনন করে পরিবেশ ধ্বংস করে বালি তুলে বিক্রি করেন। ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে চাঁদা নেন। ভয়েজ রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ব্যাপারে ভুনবীর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল ওয়াহিদ জানান, তাদের গ্রামের মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে কিছু বালি তুলে। এই মানুষদের ভয় দেখিয়ে গত সম্প্রতি ১১ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
এ ব্যপারে বার বার যোগাযোগ করেও হৃদয় দেবনাথকে পাওয় যায়নি।